ASK’s Human Chain on Human Rights Day 2020

আন্তর্জতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ১০ ডিসেম্বর ২০২০, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এর উদ্যোগে ঢাকার আসাদগেট সংলগ্ন মিরপুর রোডে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে আসক’র সিনিয়র উপপরিচালক নিনা গোস্বামী, সিনিয়র সমন্বয়কারী, আবু আহমেদ ফয়জুল কবির, দিলীপ পাল, সমন্বয়কারী রোকনুজ্জামান, সহঃ সমন্বয়কারী অনির্বান সাহা, তামান্না হক রীতিসহ অর্ধশতাধিক আসক কর্মী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট,নড়াইল, পিরোজপুর, মেহেরপুর, কক্সবাজার, বান্দরবান, ঝিনাইদহ জেলায় হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স ফোরাম মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে।

মানববন্ধনে দেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, গুম,অপহরণ, মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করা; ক্রমবর্ধমান ধর্ষণ, হত্যাসহ নারী ও শিশুনির্যাতনসহ নানা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় এবং দেশের সকল নাগরিকের মানবাধিকার নিশ্চিত করার জন্য ১২ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।
আসক’র দাবিসমূহঃ

১. রাষ্ট্রীয় বাহিনীর দ্বারা যেকোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা;যেমন- বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু,দায়িত্বে অবহেলা ইত্যাদির অভিযোগ উঠলে তা দ্রুততার সাথেনিরপেক্ষভাবে তদন্ত এবং সম্পৃক্তদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শাস্তি প্রদান করতে হবে।
২. এ পর্যন্ত সংঘটিত সকল গুম, অপহরণ ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতেহবে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে আটক বা গ্রেফতারের ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা সম্পূর্ণভাবে মেনে চলতে হবে।
৩. নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকার যাতে খর্ব না হয় তা নিশ্চিত করতেহবে। কোনো ধরনের ভয়ভীতি কিংবা প্রতিহিংসার শিকার হওয়া ছাড়াইনাগরিকরা যাতে এ অধিকারসমূহ চর্চা করতে পারে সে পরিবেশ তৈরীর ওপর জোর দিতে হবে।
৪. গণমাধ্যম ও নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকারের সাথে সাংঘর্ষিক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতেপ্রয়োজনীয় সংশোধন আনতে হবে।
৫. নারী ও শিশুর ওপর সহিংসতা বন্ধে কার্যকর সচেতনতামূলক ও প্রতিরোধমূলক কর্মসূচি জোরদার করতে হবে। নারীর প্রতি সকল বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত সিডও সনদের ধারা ২ এবং ১৬(গ) থেকে আপত্তি প্রত্যাহার করা হবে।
৬. প্রতিবন্ধী, ইনডিজিনিয়াস, দলিত, তৃতীয় লিঙ্গ, অন্যান্য অনগ্রসরজনগোষ্ঠী ও চা বাগানে কর্মরত শ্রমজীবী মানুষের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের পূর্ণ চর্চা নিশ্চিত এবং রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রেসমান অধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
৭. ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিজ বিশ্বাস ও রীতি চর্চার অধিকার ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৮. সকল অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে বৈষম্য বিরোধী আইন দ্রুততার সাথে অনুমোদন করতে হবে।
৯. জাতীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, তথ্য কমিশন,আইন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও নির্বাচন কমিশনকে কার্যকরকরে তুলতে হবে এবং এসব প্রতিষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত আমলা নিয়োগের যে ধারাবাহিকতা চলছে তা বন্ধ করতে হবে। জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যেন স্বাধীনভাবে তাদের ম্যান্ডেট বাস্তবায়ন করতে পারে সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সহযোগিতা ও গুরুত্বারোপ করতে হবে।
১০. স্বাস্থ্যখাতে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ আমলে নিয়ে সবার জন্যস্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যখাতসহ জীবনের অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে উত্থাপিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
১১. সকল নাগরিকের জন্য কভিড-১৯ ভ্যাকসিন (করোনার টিকা) প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।
১২. পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।