প্রকাশিতঃ ১০ এপ্রিল ২০২১, সংবাদ
লিঙ্কঃ মাদ্রাসায় ধর্ষণ বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে
দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসায় বহু ছেলেশিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। অভিযোগ কখনও শিক্ষক, কখনও সিনিয়র ছাত্র বা মাদ্রাসাসংশ্নিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর মাদ্রাসায় ধর্ষণের শিকার হয়েছে অন্তত ৫২ শিশু। এর মধ্যে তিনজন মারা গেছে। এছাড়া চলতি বছরের প্রথম ৩ মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে আরও ১০ শিশু।
আসক’র রিপোর্টে যে চিত্র উঠে এল তা উদ্বেগজনক। তবে বিষয়টি নতুন নয়। প্রায়ই বিভিন্ন মাদ্রাসায় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এর কিছু কিছু যখন মাত্রা ছাড়ায়, শিশুটির কোন ক্ষত হয় বা মরণাপন্ন হয় তখন প্রকাশ হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব ঘটনা আড়ালে চলে যায়। কারণ এতে লোকলজ্জার ভয় থাকে।
দুঃখজনক হলো, মাদ্রাসাগুলোয় ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চললেও তা বন্ধে তেমন কার্যকর কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে বিপথগামী কিছু শিক্ষক ও মাদ্রাসাসংশ্লিষ্টরা এটাকে অপরাধ বলেই গণ্য করেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে ধর্মের নানা অপব্যাখ্যা দেন জড়িতরা। আবার ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করে রেখে তা ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে শিশুদের জিম্মি করার ঘটনাও রয়েছে।
এ অনাচার বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ছেলেশিশুদের ধর্ষণ বা বলাৎকারের কথাটি উল্লেখ নেই। এটি অবশ্যই থাকা দরকার। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি থাকার কারণে বলাৎকারের ঘটনায় মামলা খুব কম হয়। শিক্ষক নামধারী ধর্ষকদের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া না গেলে অপরাধীদের মনে ভয় ধরানো সম্ভব নয়। আর তার জন্য প্রয়োজন সবার একযোগে সোচ্চার হওয়া।
শিক্ষার্থীরা সচেতন হলে মাদ্রাসাগুলোতে চলমান নির্যাতনের ঘটনাগুলো আরও বেশি প্রকাশিত হবে। তাই শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। এ কাজটি হতে হবে সরকারি উদ্যোগে। হাত ধোয়া কিংবা স্যানিটেশন কর্মসূচির মতো এই কাজটিও সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে চালিয়ে যেতে হবে।